স্বাবলম্বীকরণ প্রকল্প
স্বাবলম্বীকরণ প্রকল্প
স্বাবলম্বীকরণ প্রকল্পের মাধ্যমে আস-সুন্নাহ ফাউন্ডেশন দরিদ্রদেরকে প্রয়োজনীয় কারিগরি প্রশিক্ষণ ও উপকরণ-সহায়তা প্রদান করে। বেকার ও অদক্ষ নারী-পুরুষকে দক্ষতা বৃদ্ধির জন্য (আলাদাভাবে) কারিগরি প্রশিক্ষণ পূর্বক আর্থিক সহায়তা এবং প্রয়োজনীয় উপকরণ প্রদান করে আত্মনির্ভরশীল করা এ প্রকল্পের উদ্দেশ্য।
হালাল রিযক উপার্জন করার গুরুত্ব অপরিসীম। পবিত্র কুরআনে আল্লাহ তা‘আলা বলেন, ‘সালাত সমাপ্ত হওয়ার পর তোমরা পৃথিবীতে ছড়িয়ে পড়ো এবং আল্লাহর অনুগ্রহ অনুসন্ধান করো; আর আল্লাহকে বেশি বেশি স্মরণ করো, যাতে তোমরা সফল হতে পারো।’ (সূরা জুমু‘আহ: আয়াত-১০)
রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, ‘নিজ হাতে উপার্জিত খাদ্যের চেয়ে উত্তম খাদ্য কখনো কেউ খায় না।’ (সহীহ বুখারী-২০৭২)
দরিদ্র জনগোষ্ঠীর হালাল রিযক অনুসন্ধানে সহায়তা করার মানসে তাদেরকে কারিগরি প্রশিক্ষণ দেয়া হয়। প্রশিক্ষণের মাধ্যমে দক্ষতা অর্জনের পাশাপাশি একই সময়ে তাঁরা যাতে দ্বীনের মৌলিক জ্ঞান অর্জন করতে পারেন এবং নীতিবান ও বিশ্বস্ত নাগরিক হন— এজন্য তাদেরকে প্রখ্যাত ইসলামিক স্কলারদের মাধ্যমে ইসলামের মৌলিক আকীদা ও বিধান শিক্ষাদান করা হয়। যেন তারা আর্থিকভাবেও স্বাবলম্বীও হতে পারেন, পাশাপাশি আল্লাহর খাঁটি বান্দা নীতি-নৈতিকতায় বলীয়ান হিসেবে জীবন যাপন করতে পারেন।
আমরা মনে করি— শুধু প্রশিক্ষণ, অর্থ ও উপকরণ-সহায়তা প্রদান অনেকের ক্ষেত্রে স্বাবলম্বিতা অর্জনের জন্য যথেষ্ট নয়। এজন্য আমরা ফাউন্ডেশনের অধীনে প্রশিক্ষিত, আর্থিক ও উপকরণ-সহায়তাপ্রাপ্তদের নিয়মিত তত্ত্বাবধান করি, খোঁজ-খবর রাখি এবং প্রয়োজনীয় পরামর্শ দিয়ে থাকি। এভাবে আমরা নৈতিকতা সম্পন্ন সুদক্ষ কর্মজীবী জনগোষ্ঠী তৈরিতে ভূমিকা রাখি।
আস-সুন্নাহ ফাউন্ডেশন যে ধরনের সহযোগিতা প্রদান করে:
মেয়েদের জন্য ব্লক-বাটিক, সেলাই, নকশি কাঁথা, হস্তশিল্প, হোমমেড ফুড, মৃৎশিল্প, গহনা তৈরি, অ্যামব্রয়ডারিসহ উপযোগী নানান প্রশিক্ষণ ও উপকরণ বিতরণ
ছেলেদের জন্য ড্রাইভিং, লন্ড্রি, টাইলস মিস্ত্রি, রাজমিস্ত্রি, ইলেক্ট্রেশিয়ান, এসি/ফ্রিজ মেকানিক, গ্রাফিক্স ডিজাইনার, প্রোগ্রামার, রংমিস্ত্রি-সহ উপযোগী প্রশিক্ষণ ও উপকরণ বিতরণ
গরিব কৃষিজীবীদের মধ্যে গবাদি পশু, মুরগী ও কবুতর পালন প্রশিক্ষণ ও বিতরণ
রিকশা-ভ্যানসহ নানা ধরনের আয়-রোজগার উপযোগী পণ্য বিতরণ
স্বাবলম্বীকরণ প্রকল্পের আওতায় আস-সুন্নাহ ফাউন্ডেশন এ পর্যন্ত ৫০ জন পুরুষকে প্রশিক্ষণ শেষে ভ্যান ও নগদ অর্থ বিতরণ করেছে এবং ১০২জন নারীকে ব্লক-বাটিকের প্রশিক্ষণ প্রদানপূর্বক এ সম্পর্কিত ৭৫০০ টাকার করে উপকরণ প্রদান করেছে।
এছাড়া এই প্রকল্পের আওতায় নতুন নতুন বিষয় প্রশিক্ষণের বিষয় যুক্ত হচ্ছে এবং হবে ইন শা আল্লাহ।
সবার জন্য কুরবানী
সবার জন্য কুরবানী
সবার জন্য কুরবানী আর-রহমান ফাউন্ডেশনের মানবসেবামূলক নিয়মিত কার্যক্রমের অংশ। প্রতিষ্ঠার পর থেকেই থেকেই ফাউন্ডেশন দীনদার ধনীদের পক্ষ থেকে গরিব জনগোষ্ঠীর মধ্যে কুরবানী কার্যক্রম পরিচালনা করে আসছে।
সাধারণত বেশি সংখ্যক কুরবানী হয়ে থাকে শহর-কেন্দ্রিক। অথচ অধিক সংখ্যক গরিব বাস করে গ্রামে। শহরের একটি বহুতল ভবনে যত সংখ্যক গরু কুরবানী হয়ে থাকে, এই পরিমাণ গরু কুরবানী কয়েকটি গ্রামেও হয় কি না— যথেষ্ট সন্দেহ রয়েছে। সবার জন্য কুরবানী প্রকল্পের মাধ্যমে আস-সুন্নাহ ফাউন্ডেশন শহুরে ধনীদের কুরবানীর একটা অংশ প্রত্যন্ত অঞ্চলের সুবিধা-বঞ্চিত দরিদ্র জনগোষ্ঠীর নিকট পৌঁছে দেয়।
মাঠ পর্যায়ে প্রকল্প বাস্তবয়নে ফাউন্ডেশনকে ফাউন্ডেশনের স্বেচ্ছাসেবীগণ সহয়তা করেন।
উল্লেখ্য, একটি ছাগল পূর্ণাঙ্গভাবে একজনের পক্ষ থেকে এবং একটি গরুর এক সপ্তমাংশ পূর্ণাঙ্গভাবে একজনের পক্ষ থেকে কুরবানী করে গোশত গরিবদের মধ্যে বণ্টন করা হয়।
এই প্রকল্পের আওতায় এখন পর্যন্ত দেশের ৫১টি জেলায় ৬৭৬টি গরু ও ১৬ হাজার ৪৯৭টি ছাগল কুরবানী করে গরিব মানুষদের মধ্যে বিতরণ করা হয়েছে। পর্যায়ক্রমে ইন শা আল্লাহ এই প্রকল্পের কার্যক্রম প্রত্যেক জেলা ও উপজেলায় বাস্তবায়িত হবে।
বন্যার্তদের মধ্যে ত্রাণ বিতরণ
বন্যার্তদের মধ্যে ত্রাণ বিতরণ
প্রতি বছর বর্ষাকালে বাংলাদেশের প্রায় ২৬,০০০ বর্গ কিলোমিটার এলাকা বন্যায় প্লাবিত হয়। এসময় বিশেষভাবে দেশের উত্তরাঞ্চলের বানভাসি মানুষ চরম দুর্ভোগের শিকার হন। আস সুন্নাহ ফাউন্ডেশন দেশের বন্যাকবলিত জেলাগুলোতে প্রতি বছরই ত্রাণ কার্যক্রম ও দুর্দশাগ্রস্ত-অসহায় মানুষের পাশে দাঁড়ানোর উদ্যোগ নিয়ে থাকে।
দুর্দশাগ্রস্ত মানুষের পাশে দাঁড়ানোর গুরুত্ব ও ফযীলত অনেক বেশি। আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি কোনো অভাবীর কষ্ট দূর করবেন, আল্লাহ তা‘আলা ইহকালে ও পরকালে তার কষ্ট দূর করে দেবেন। ততক্ষণ পর্যন্ত আল্লাহ তা‘আলা বান্দার সহায়তা করতে থাকেন, যতক্ষণ পর্যন্ত সে তার কোনো ভাইয়ের সাহায্যে নিয়োজিত থাকে।’ (সুনান তিরমিযী, হাদীস-২৯৪৫)
এই কার্যক্রমের আওতায় অভাবী ও দুর্দশাগ্রস্ত মানুষের পাশে দাঁড়ানোর সুযোগ তৈরি হয় এবং উপরিউক্ত হাদীসের ওপর আমল হয়।
ত্রাণ সামগ্রীর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো— চাল, ডাল, তেল, আলু, চিড়া, মোমবাতি, গ্যাস লাইটার, খাবার স্যালাইন এবং পানি বিশুদ্ধকরণ ট্যাবলেটসহ প্রয়োজনীয় উপকরণ। ইতোমধ্যে ১৫০০টিরও বেশি পরিবারের মাঝে ত্রাণ বিতরণ ও ১৫০টি পরিবারের মাঝে নগদ অর্থ বিতরণ করা হয়েছে। এছাড়াও বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত বিভিন্ন মসজিদ ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানকে নগদ অর্থ দেওয়া হয়েছে ও বন্যায় অনাহারে-অর্ধাহারে কাটানো গবাদি পশুর মালিকদের মাঝে খৈল ও ভূসি বিতরণ করা হয়েছে। বগুড়া জেলার সারিয়াকান্দি থানার সুজনের পাড়া চরে স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও প্রশাসনের সহায়তায় ৩০টি ঘর এবং ১৬টি টয়লেট ও ১৬টি টিউবওয়েল স্থাপন করে বন্যায় ভিটেহারাদের মাঝে বণ্টন করা হয়েছে।
এতিমদের লালন-পালন ও শিক্ষাদান
এতিমদের লালন-পালন ও শিক্ষাদান
আর-রহমান ফাউন্ডেশন স্বচ্ছলদের পক্ষ থেকে এতিম শিশুদের দায়িত্বভার গ্রহণ করে থাকে। তাদের ভরণ-পোষণ এবং উন্নত শিক্ষা ব্যবস্থার যাবতীয় দায়িত্ব দাতার পক্ষ থেকে ফাউন্ডেশন পালন করে থাকে। এতিমের লালন-পালন মানে তাকে যেনতেনভাবে লালন পালন করা নয়; বরং সামর্থ অনুযায়ী (অনেকটা নিজের সন্তানের মতো) তাকে লালন পালন করা উচিত। সেজন্য ফাউন্ডেশন একজন এতিমের জন্য স্পন্সরের পক্ষ থেকে উন্নমানের পানাহার, চিকিৎসা এবং পড়াশোনার বন্দোবস্ত করে থাকে।
মহান আল্লাহর সন্তষ্টি ও সওয়াবের আশায় ইয়াতিমের অভিভাকত্ব গ্রহণ বা দায়িত্বভার নেওয়া গুরুত্বপূর্ণ একটি ইবাদত ও শ্রেষ্ঠতম দানের খাত। সাহল বিন সাদ (রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন, ‘আমি ও এতিমের প্রতিপালনকারী জান্নাতে এভাবে থাকব (তিনি তর্জনি ও মধ্যমা আঙুল দিয়ে ইঙ্গিত করেন)।’ (সুনান আবু দাউদ: হাদীস-৫১৫০)
বর্তমানে ৫০জন এতিম ও দুস্থ শিশুর সার্বিক দায়িত্ব পালন করছে ফাউন্ডেশন।
সাদাকাহ জারিয়াহ
সাদাকাহ জারিয়াহ
সাদকাহ জারিয়াহ মানে— যে দানের উপকারিতা শুধু এককালীন নয়; বরং দীর্ঘদিন অব্যাহত থাকে। যে দানের উপকারিতা একবারই অর্জিত হয়, সেগুলোর সওয়াবও একবারই হয়। পক্ষান্তরে যে দানের উপকারিতা দীর্ঘদিন অব্যাহত থাকে, সেগুলোর সাওয়াব তথা বিনিময়ও মহান আল্লাহ দীর্ঘদিন পর্যন্ত অব্যাহত রাখেন।
আবু হুরায়রাহ (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন, ‘যখন মানুষ মৃত্যুবরণ করে তখন তার সমস্ত আমল বন্ধ হয়ে যায় তিন প্রকার আমল ছাড়া। ১. সাদাকাহ জারিয়াহ; ২. এমন ইলম বা জ্ঞান যার দ্বারা অন্যের উপকার হয়; ৩. পুণ্যবান সন্তান যে তার জন্যে দু’আ করতে থাকে’। (সহীহ মুসলিম: হাদীস-১৬৩১)
আস-সুন্নাহ ফাউন্ডেশনের সাদাকায়ে জারিয়া প্রকল্পসমূহের মধ্যে রয়েছে মসজিদ-মাদরাসা নির্মাণ, নলকূপ খনন, দীনি বই-পুস্তক বিতরণ ও গৃহহীনদের জন্য গৃহ নির্মাণ ইত্যাদি।
এসব প্রকল্পের নির্দিষ্ট কোনো একটির দায়িত্ব এককভাবে নেওয়া যায়। আবার কেউ চাইলে সাদাকাহ জারিয়াহ খাতে যে কোনো পরিমাণ দান করতে পারেন। সে অর্থ কতৃপক্ষ সাদাকা জারিয়াহর যে প্রকল্পটি গুরুত্বপূর্ণ ও প্রয়োজন অনুভব করবেন সে খাতে ব্যয় করবেন।
এই প্রকল্পের আওতায় ইতোমধ্যে ঠাকুরাঁওয়ে ১০টি নওমুসলিম পরিবারকে ১.৫ শতাংশ জমি ক্রয় পূর্বক বাসগৃহ নির্মাণ করে দেয়া হয়েছে।
শীতবস্ত্র বিতরণ
শীতবস্ত্র বিতরণ
ইসলামের অন্যতম শিক্ষা মানবসেবা। কনকনে শীতে প্রত্যন্ত অঞ্চলের অসহায় শীতার্ত মানুষদের একটুখানি উষ্ণতা এনে দিতে আস-সুন্নাহ ফাউন্ডেশন প্রতি বছর আয়োজন করে ‘শীতবস্ত্র বিতরণ ও দাওয়াহ কর্মসূচি’।
রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন, ‘দয়াবান লোকদের পরম করুণাময় আল্লাহও দয়া করেন। তোমরা জমিনবাসীর প্রতি সদয় হও, আসমানবাসী তোমাদের প্রতি সদয় হবেন।’ (সুনান আবু দাউদ: হাদীস-৪৯৪১; সুনান তিরমিযী, হাদীস-১৯২৪)
গত ৩ বছর ধরে আস সুন্নাহ ফাউন্ডেশন দেশের উত্তরাঞ্চলসহ দেশের ২০টি জেলায় প্রায় ২২ হাজার ৩৩৫টি শীতবস্ত্র বিতরণ করেছে। প্রতিটি স্পটে শীতবস্ত্র বিতরণের সময় বিশেষজ্ঞ আলেমে দীন ও দা‘য়ীদের মাধ্যমে ঈমান-আকীদা, সালাত-সিয়ামের গুরুত্ব, নীতি-নৈতিকতা ও সততার অপরিহার্যতা বিষয়ে গুরুত্বপূর্ণ আলোচনা ও ক্ষেত্রবিশেষ দাওয়াতি বই ও লিফলেট বিতরণ করা হয়।
বৃক্ষরোপণ কর্মসূচি
বৃক্ষরোপণ কর্মসূচি
বদলে যাচ্ছে আবহাওয়ার চিরচেনা চরিত্র। গরমের তীব্রতায় পুড়ছে দেশ। জলবায়ু পরিবর্তন এবং বৃক্ষ নিধনসহ আমাদেরই হাতের কামাইয়ের পরিণতি প্রত্যক্ষ করছি আমরা। এ থেকে রক্ষা পেতে দরকার প্রচুর পরিমাণে গাছ লাগানো। এই প্রয়োজনীয়তা উপলব্ধি করে আস-সুন্নাহ ফাউন্ডেশন প্রতিবছর সারাদেশে ফলজ বৃক্ষ রোপনের পরিকল্পনা হাতে নিয়েছে। সাধারণ মানুষ থেকে অর্থ সংগ্রহ করে দেশের প্রত্যন্ত এলাকার মাসজিদ, মাদরাসা এবং দরিদ্র জনগোষ্ঠী—যাদের গাছ লাগানোর মতো জমি রয়েছে—ফলজ গাছের চারা ক্রয় করে লাগানোর ব্যবস্থা করা হয়। এর মাধ্যমে সাধারণ মানুষকে সাদাকায়ে জারিয়ায় অংশগ্রহণের সুযোগ এবং দরিদ্রদের বছরব্যাপী আয়ের সুযোগ প্রদান করা হয়।
গাছ লাগানোর গুরুত্ব ও ফযীলত ও অপরিসীম। এটি একটি সাদাকায়ে জারিয়ামূলক নেক কাজ। যদি কেউ মানুষ কিংবা প্রাণীকূলের উপকার সাধনের লক্ষ্যে ফলজ বা বনজ গাছ রোপণ করে এবং এর মাধ্যমে সাওয়াব আশা করে, তবে এটি একটি উত্তম সাদাকায়ে জারিয়াহ; যার সওয়াবের ধারা ব্যক্তির মৃত্যুর পরও অব্যাহত থাকতে পারে। রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন, ‘যদি কোনো মুসলমান একটি বৃক্ষ রোপণ করে অথবা কোনো শস্য উৎপাদন করে এবং তা থেকে কোনো মানুষ কিংবা পাখি অথবা পশু ভক্ষণ করে, তাহলে তা সে ব্যক্তির জন্য সাদাকাস্বরূপ।’ (সহীহ বুখারী: হাদীস-২৩২০, সহীহ মুসলিম: হাদীস-১৫৫৩)
আস-সুন্নাহ ফাউন্ডেশন সাধারণত উন্নত জাতের ফলজ গাছ লাগানোর চেষ্টা করে। যাতে পরিবেশ সুরক্ষার পাশাপাশি গরিব মানুষের অর্থের সংস্থানও হতে পারে। প্রথম বছর যেসব গাছ লাগানো হয়েছে, তা হলো—
২০২১ সালে ৫০ জেলায় মোট ৬৫ হাজার ৭৯২টি গাছ লাগানো হয়েছে। ইন শা আল্লাহ প্রতি বছর এই ধারা অব্যাহত থাকবে; বরং আরো বেগবান হবে।
ইফতার ও রমাদান ফুড বিতরণ
ইফতার ও রমাদান ফুড বিতরণ
ইফতার ও রামাদান ফুড বিতরণ আস-সুন্নাহ ফাউন্ডেশনের নিয়মিত কর্মসূচির একটি। দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলের অভাবী সিয়াম পালনকারীরা যেন রামযান মাসে নির্বিঘ্নে সিয়াম পালন ও ইবাদত-বন্দেগী করতে পারেন, সে লক্ষ্যে তাদের মধ্যে ইফতার সামগ্রী বিতরণের উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়।
ইফতার করানো অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি আমল। রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন, যে ব্যক্তি কোনো সিয়াম পালনকারীকে ইফতার করাবে তাকে সিয়াম পালনকারীর সমপরিমাণ সাওয়াব দেওয়া হবে। তাতে সিয়াম পালনকারীর সাওয়াব থেকে বিন্দুমাত্র কমানো হবে না। (সুনান তিরমিযী: হাদীস-৮০৭; সুনান ইবনু মাজাহ: হাদীস-১৭৪৬)
আস-সুন্নাহ ফউন্ডেশন বিগত দুই বছর ধরে দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে ১৮টি জেলায় ৯০ হাজার ৯১৫জন সিয়াম পালনকারীর মধ্যে ইফতার সামগ্রী বিতরণ করেছে।
ইফতার সামগ্রীর মধ্যে ছিল, ছোলা, মুড়ি, গুড়ো দুধ, চিড়া, খেজুর, তেল, চিনি, সেমাই, ইসবগুলের ভূসি ইত্যাদি।
সাপ্তাহিক দারস
সাপ্তাহিক দারস
আস-সুন্নাহ ফাউন্ডেশনের দাওয়াহ কার্যক্রমের আওতায় ঈমান-আকীদা, কুরআন, হাদীস, তাফসীর, ইতিহাস, দ্বীনি মাসআলা-মাসায়েলসহ সমসাময়িক বিভিন্ন বিষয়ে সাপ্তাহিক দারস অনুষ্ঠিত হয়। আপাতত নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জ ভূমিপল্লী জামে মাসজিদ ও কমপ্লেক্সে বিদগ্ধ আলেম, বিশিষ্ট আলোচক ও মিডিয়া ব্যক্তিত্ব, আস-সুন্নাহ ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান শায়খ আহমাদুল্লাহ দারস পরিচালনা করে আসছেন। পর্যায়ক্রমে দেশের বিভিন্ন মাসজিদ ও প্রতিষ্ঠানে এটি চালু করার চিন্তা রয়েছে।
বই-পুস্তক লিফলেট বিতরণ
বই-পুস্তক লিফলেট বিতরণ
ঈমান-আকীদা, দোয়া ও ইসলামের বিধি-বিধান সম্পর্কে মুসলিমদের জ্ঞানার্জনের অন্যতম উপায় হিসাবে ফাউন্ডেশনের পক্ষ থেকে পবিত্র কুরআনসহ বিভিন্ন ইসলামিক বই-পুস্তক ও লিফলেট বিনামূল্যে বিতরণ করা হয়। এই প্রকল্পের আওতায় ইতোমধ্যে ফাউন্ডেশনের প্রকাশনা বিভাগ থেকে প্রকাশিত একাধিক পুস্তিকার দশ লক্ষাধিক কপি বিতরণ করা হয়েছে।
মাজলিসুস সুন্নাহ
মাজলিসুস সুন্নাহ
সাধারণ মানুষের মধ্যে কুরআন ও সহীহ সুন্নাহ-নির্ভর বিশুদ্ধ ইসলামী শিক্ষা, সচেতনতা ও জীবনমুখী দ্বীনদারি, আদর্শ, নৈতিকতা ও দ্বীনি সচেতনতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে আস-সুন্নাহ ফাউন্ডেশন প্রতি মাসে ‘মাজলিসুস সুন্নাহ’ নামে একটি বৈঠকের আয়োজন করে। ব্যতিক্রমধর্মী এই আয়োজনটি প্রতি ইংরেজি মাসের সুবিধাজনক কোনো একটি সময়ে হয়ে থাকে। পর্যায়ক্রমে এই আয়োজনটি জেলাভিত্তিক করা হবে ইন শা আল্লাহ।
ইসলাম প্রচার
ইসলাম প্রচার
ইসলাম প্রচারের সুমহান দায়িত্ব নিয়েই যুগে যুগে অসংখ্য নবী-রাসূল পৃথিবীতে প্রেরিত হয়েছেন। আল্লাহর প্রতি যাদের বিশ্বাস নেই, অথবা যারা বিকৃত বিশ্বাসের অধিকারী, তাদেরকে সঠিক পথের দিশা দেয়া, আল্লাহর মনোনীত দ্বীনের পথে আহ্বান করাই ছিল নবী-রাসূলদের কাজ। সব নবীই তাঁর উম্মতের পরম হিতাকাঙ্ক্ষী হিসেবে তাদের একত্ববাদ ও বিশুদ্ধ ইবাদতের আদেশ করেছেন এবং শিরক, কুফর ও পাপাচার করতে নিষেধ করেছেন। মহান আল্লাহ বলেন, ‘হে রাসূল! আপনার পালনকর্তার পক্ষ থেকে আপনার ওপর যা অবতীর্ণ হয়েছে, তা প্রচার করুন। যদি আপনি তা না করেন, তাহলে আপনি আল্লাহর বার্তা প্রচার করলেন না।’ (সূরা মায়িদা: ৬৭)।
যেহেতু নবুওতের ধারা বন্ধ হয়ে গিয়েছে; সুতরাং ইসলাম প্রচারের এই গুরুদায়িত্ব এই উম্মতের ওপরই অর্পিত হয়েছে। দীন ইসলাম প্রচারের এই দায়িত্বে শৈথিল্যের পরিণতি কী হতে পারে, তা আজ আমাদের সামনে স্পষ্ট। ইসলাম সঠিকভাবে প্রচার না হওয়ার সুযোগে কুচক্রি ও স্বার্থান্বেষী মহল ইসলামের নামে বিভিন্ন অপতৎপরতা এবং বিচ্ছিন্নতা সৃষ্টি করছে।
আস-সুন্নাহ ফাউন্ডেশনের তিনটি মৌলিক কাজের একটি হলো ‘দাওয়াহ’ বা ইসলাম প্রচার। বিশ্বব্যাপী পবিত্র কুরআন ও সহীহ্ সুন্নাহর আলোকে ইসলামের সঠিক চিত্র প্রচার-প্রসারের লক্ষ্যে বিভিন্ন পদ্ধতিতে কাজ করে আসছে। মূলত ইসলামের বহুমুখী খেদমত ও প্রচার-প্রসারই ফাউন্ডেশনের মূল লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য। সপ্তাহিক দারস, মাসিক মাজলিসুস সুন্নাহ ও নিজস্ব স্টুডিও থেকে প্রচারিত বিভিন্ন দাওয়াতী উদ্যোগ ফাউন্ডেশনের ইসলাম প্রচার কার্যক্রমেরই অংশ।